Friday, March 9, 2012

হযরত হূদ (আলাইহিস সালাম)- ১ম পর্ব

হূদ (আ.)-এর পরিচয় :
হযরত হূদ (আ.) দুর্ধর্ষ ও শক্তিশালী ‘আদ জাতির প্রতি প্রেরিত হয়েছিলেন। আল্লাহর গযবে ধ্বংসপ্রাপ্ত বিশ্বের প্রধান ছয়টি জাতির মধ্যে কওমে নূহ-এর পরে কওমে ‘আদ ছিল দ্বিতীয় জাতি। হূদ (আ.) ছিলেন এদেরই বংশধর। ‘আদ ও ছামূদ ছিল নূহ (আ.)-এর পুত্র সামের বংশধর এবং নূহের পঞ্চম অথবা অষ্টম অধঃস্তন পুরুষ। ইরামপুত্র ‘আদ-এর বংশধরগণ ‘আদ ঊলা’ বা প্রথম ‘আদ এবং অপর পুত্রের সন্তান ছামূদ-এর বংশধরগণ ‘আদ ছানী বা দ্বিতীয় ‘আদ বলে খ্যাত।*১* ‘আদ ও ছামূদ উভয় গোত্রই ইরাম-এর দু’টি শাখা। সেকারণ ‘ইরাম’ কথাটি ‘আদ ও ছামূদ উভয় গোত্রের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। এজন্য কুরআনে কোথাও ‘আদ ঊলা’ {নাজম ৫০} এবং কোথাও ‘ইরাম যাতিল ‘ইমাদ’ {ফজর ৭} শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।

‘আদ সম্প্রদায়ের ১৩টি পরিবার বা গোত্র ছিল। আম্মান হ’তে শুরু করে হাযারামাউত ও ইয়ামন পর্যন্ত তাদের বসতি ছিল।*২* তাদের ক্ষেত-খামারগুলো ছিল অত্যন্ত সজীব ও শস্যশ্যামল। তাদের প্রায় সব ধরনের বাগ-বাগিচা ছিল। তারা ছিল সুঠামদেহী ও বিরাট বপু সম্পন্ন। আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতি অনুগ্রহের দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু বক্রবুদ্ধির কারণে এসব নে‘মতই তাদের কাল হয়ে দাঁড়ালো। তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হয়েছিল ও অন্যকে পথভ্রষ্ট করেছিল। তারা শক্তি মদমত্ত হয়ে ‘আমাদের চেয়ে শক্তিশালী আর কে আছে’
{ফুছছিলাত/হামীম সাজদাহ ১৫} বলে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করতে শুরু করেছিল। তারা আল্লাহর ইবাদত পরিত্যাগ করে নূহ (আ.)-এর আমলে ফেলে আসা মূর্তিপূজার শিরক-এর পুনরায় প্রচলন ঘটালো। মাত্র কয়েক পুরুষ আগে ঘটে যাওয়া নূহের সর্বগ্রাসী প্লাবনের কথা তারা বেমালুম ভুলে গেল। ফলে আল্লাহ পাক তাদের হেদায়াতের জন্য তাদেরই মধ্য হ’তে হূদ (আ.)-কে নবী হিসাবে প্রেরণ করলেন। উল্লেখ্য যে, নূহের প্লাবনের পরে এরাই সর্বপ্রথম মূর্তিপূজা শুরু করে।

হযরত হূদ (আ.) ও কওমে ‘আদ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের ১৭টি সূরায় ৭৩টি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।*৩*


হূদ (আ.)-এর দাওয়াত :

সূরা আ‘রাফ ৬৫-৭২ আয়াতে আল্লাহ বলেন, যার অনুবাদঃ আর ‘আদ সম্প্রদায়ের নিকটে (আমরা প্রেরণ করেছিলাম) তাদের ভাই হূদকে। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই। অতঃপর তোমরা কি আল্লাহভীরু হবে না? {আ‘রাফ ৭/৬৫}। ‘তার সম্প্রদায়ের কাফের নেতারা বলল, আমরা তোমাকে নির্বুদ্ধিতায় লিপ্ত দেখতে পাচ্ছি এবং আমরা তোমাকে মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত মনে করি’ {৬৬}। ‘হূদ বলল, হে আমার সম্প্রদায়! আমার মধ্যে কোন নির্বুদ্ধিতা নেই। বরং আমি বিশ্বপালকের প্রেরিত একজন রাসূল মাত্র’ {৬৭}। ‘আমি তোমাদের নিকটে প্রতিপালকের পয়গাম সমূহ পৌঁছে দেই এবং আমি তোমাদের হিতাকাংখী ও বিশ্বস্ত’ {৬৮}। ‘তোমরা কি আশ্চর্য বোধ করছ যে, তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ হ’তে তোমাদের থেকেই একজনের নিকটে অহী (যিকর) এসেছে, যাতে সে তোমাদেরকে ভয় প্রদর্শন করে? তোমরা স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তোমাদেরকে কওমে নূহের পরে নেতৃত্বে অভিষিক্ত করলেন ও তোমাদেরকে বিশালবপু করে সৃষ্টি করলেন। অতএব তোমরা আল্লাহর নে‘মত সমূহ স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ {৬৯}। ‘তারা বলল, তুমি কি আমাদের কাছে কেবল এজন্য এসেছ যে, আমরা শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদত করি, আর আমাদের বাপ-দাদারা যাদের পূজা করত, তাদেরকে পরিত্যাগ করি? তাহ’লে নিয়ে এস আমাদের কাছে (সেই আযাব), যার দুঃসংবাদ তুমি আমাদের শুনাচ্ছ, যদি তুমি সত্যবাদী হও’ {৭০}। ‘হূদ বলল, তোমাদের উপরে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হ’তে শাস্তি ও ক্রোধ অবধারিত হয়ে গেছে। তোমরা কেন আমার সাথে ঐসব নাম সম্পর্কে বিতর্ক করছ, যেগুলোর নামকরণ তোমরা ও তোমাদের বাপ-দাদারা করেছ? ঐসব উপাস্যদের সম্পর্কে আল্লাহ কোন প্রমাণ (সুলতান) নাযিল করেননি। অতএব অপেক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি’ {৭১}। ‘অনন্তর আমরা তাকে ও তার সাথীদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং যারা আমাদের আয়াত সমূহে মিথ্যারোপ করেছিল, তাদের মূলোৎপাটন করে দিলাম। বস্তুতঃ তারা বিশ্বাসী ছিল না’ {আ‘রাফ ৭/৬৫-৭২}।

অতঃপর সূরা হূদ ৫০-৬০ আয়াতে আল্লাহ উক্ত ঘটনা বর্ণনা করেছেন নিম্নরূপেঃ যার অনুবাদঃ আর ‘আদ জাতির প্রতি (আমরা) তাদের ভাই হূদকে (প্রেরণ করেছিলাম)। সে তাদেরকে বলল, হে আমার জাতি! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন মা‘বূদ নেই। বস্তুতঃ তোমরা সবাই এ ব্যাপারে মিথ্যারোপ করছ’
{হূদ ১১/৫০}। ‘হে আমার জাতি! (আমার এ দাওয়াতের জন্য) আমি তোমাদের কাছে কোনরূপ বিনিময় চাই না। আমার পারিতোষিক তাঁরই কাছে রয়েছে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তোমরা কি বুঝ না’? {৫১}। ‘হে আমার কওম! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তাঁরই দিকে ফিরে যাও। তিনি আসমান থেকে তোমাদের উপর বারিধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির উপর শক্তি বৃদ্ধি করবেন। তোমরা অপরাধীদের ন্যায় মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না’ {৫২}। ‘তারা বলল, হে হূদ! তুমি আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নিয়ে আসনি, আর আমরাও তোমার কথা মত আমাদের উপাস্যদের বর্জন করতে পারি না। বস্তুতঃ আমরা তোমার প্রতি বিশ্বাসী নই’ {৫৩}। ‘বরং আমরা তো একথাই বলতে চাই যে, আমাদের কোন উপাস্য-দেবতা (তোমার অবিশ্বাসের ফলে ক্রুদ্ধ হয়ে) তোমার উপরে অশুভ আছর করেছেন। হূদ বলল, আমি আল্লাহকে সাক্ষী রাখছি, আর তোমরাও সাক্ষী থাক যে, তাদের থেকে আমি সম্পূর্ণ মুক্ত, যাদেরকে তোমরা শরীক করে থাক’ {৫৪} ‘তাঁকে ছাড়া। অতঃপর তোমরা সবাই মিলে আমার অনিষ্ট করার প্রয়াস চালাও এবং আমাকে কোনরূপ অবকাশ দিয়ো না’ {৫৫}। ‘আমি আল্লাহর উপরে ভরসা করেছি। যিনি আমার ও তোমাদের পালনকর্তা। ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নেই, যা তাঁর আয়ত্তাধীন নয়। আমার পালনকর্তা সরল পথে আছেন’ (অর্থাৎ সরল পথের পথিকগণের সাথে আছেন)’ {৫৬}। ‘এরপরেও যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে (জেনে রেখ যে,) আমি তোমাদের নিকটে পৌঁছে দিয়েছি যা নিয়ে আমি তোমাদের নিকটে প্রেরিত হয়েছি। আমার প্রভু অন্য কোন জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন, তখন তোমরা তাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। নিশ্চয়ই আমার পালনকর্তা প্রতিটি বস্তুর হেফাযতকারী’ {৫৭}। ‘অতঃপর যখন আমাদের আদেশ (গযব) উপস্থিত হ’ল, তখন আমরা নিজ অনুগ্রহে হূদ ও তার সাথী ঈমানদারগণকে মুক্ত করি এবং তাদেরকে এক কঠিন আযাব থেকে রক্ষা করি’ {৫৮}। ‘এরা ছিল ‘আদ জাতি। যারা তাদের পালনকর্তার আয়াত সমূহকে (নিদর্শন সমূহকে) অস্বীকার করেছিল ও তাদের নিকটে প্রেরিত রাসূলগণের অবাধ্যতা করেছিল এবং তারা উদ্ধত ও হঠকারী ব্যক্তিদের আদেশ পালন করেছিল’ {৫৯}। ‘এ দুনিয়ায় তাদের পিছে পিছে অভিসম্পাৎ রয়েছে এবং রয়েছে ক্বিয়ামতের দিনেও। জেনে রেখ ‘আদ জাতি তাদের পালনকর্তার সাথে কুফরী করেছে। জেনে রেখ হূদের কওম ‘আদ জাতির জন্য অভিসম্পাৎ’ {হূদ ১১/৫০-৬০}।

হূদ (আ.) তাঁর জাতিকে তাদের বিলাসোপকরণ ও অন্যায় আচরণ সম্পর্কে সতর্ক করেন এবং এতদসত্ত্বেও তাদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ সমূহ স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, যেমন সূরা শো‘আরায় ১২৮-১৩৯ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, যার অনুবাদঃ তোমরা কি প্রতিটি উঁচু স্থানে অযথা নিদর্শন নির্মাণ করছ
{২৬/১২৮}? (যেমন সুউচ্চ টাওয়ার, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ ইত্যাদি)। ‘এবং তোমরা বড় বড় প্রাসাদ সমূহ নির্মাণ করছ, যেন তোমরা সেখানে চিরকাল বসবাস করবে’ {১২৯}? (যেমন ধনী ব্যক্তিরা দেশে ও বিদেশে বিনা প্রয়োজনে বড় বড় বাড়ী করে থাকে)। ‘এছাড়া যখন তোমরা কাউকে আঘাত হানো, তখন নিষ্ঠুর-যালেমদের মত আঘাত হেনে থাক {১৩০}’ (বিভিন্ন দেশে পুলিশী নির্যাতনের বিষয়টি স্মরণযোগ্য)। ‘অতএব তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর {১৩১}’। ‘তোমরা ভয় কর সেই মহান সত্তাকে, যিনি তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন ঐসব বস্তু দ্বারা যা তোমরা জানো’ {১৩২}। ‘তিনি তোমাদের সাহায্য করেছেন গবাদি পশু ও সন্তানাদি দ্বারা {১৩৩}’ ‘এবং উদ্যান ও ঝরণা সমূহ দ্বারা {১৩৪}’। (অতঃপর হূদ (আ.) কঠিন আযাবের ভয় দেখিয়ে বললেন,) ‘আমি তোমাদের জন্য মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করছি’ {১৩৫}। জবাবে কওমের নেতারা বলল, ‘তুমি উপদেশ দাও বা না দাও সবই আমাদের জন্য সমান’ {১৩৬}। ‘তোমার এসব কথাবার্তা পূর্ববর্তী লোকদের রীতি-অভ্যাস বৈ কিছু নয়’ {১৩৭}। ‘আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হব না’ {১৩৮}। (আল্লাহ বলেন,) ‘অতঃপর (এভাবে) তারা তাদের নবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। ফলে আমরাও তাদেরকে ধ্বংস করে দিলাম। এর মধ্যে (শিক্ষণীয়) নিদর্শন রয়েছে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী ছিল না’ {শো‘আরা ২৬/১২৮-১৩৯}।

সূরা হা-মীম সাজদার ১৪-১৬ আয়াতে ‘আদ জাতির অলীক দাবী, অযথা দম্ভ ও তাদের উপরে আপতিত শাস্তির বর্ণনা সমূহ এসেছে এভাবে, ‘...তারা (‘আদ ও ছামূদের লোকেরা) বলেছিল, আমাদের প্রভু ইচ্ছা করলে অবশ্যই ফেরেশতা পাঠাতেন। অতএব আমরা তোমাদের আনীত বিষয় অমান্য করলাম’
{৪১/১৪}। ‘অতঃপর ‘আদ-এর লোকেরা পৃথিবীতে অযথা অহংকার করল এবং বলল, আমাদের চেয়ে অধিক শক্তিধর কে আছে? তারা কি লক্ষ্য করেনি যে, যে আল্লাহ তাদের সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাদের অপেক্ষা অধিক শক্তিধর? বস্তুতঃ তারা আমাদের নিদর্শন সমূহ অস্বীকার করত’ {১৫}। ‘অতঃপর আমরা তাদের উপরে প্রেরণ করলাম ঝঞ্ঝাবায়ু বেশ কয়েকটি অশুভ দিনে, যাতে তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনার কিছু আযাব আস্বাদন করানো যায়। আর পরকালের আযাব তো আরও লাঞ্ছনাকর। যেদিন তারা কোনরূপ সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না’ {ফুছছিলাত/হা-মীম সাজদাহ ৪১/১৪-১৬}।

সূরা আহক্বাফ ২১-২৬ আয়াতে উক্ত আযাবের ধরন বর্ণিত হয়েছে এভাবে, যেমন আল্লাহ বলেন, ‘আর তুমি ‘আদ-এর ভাই (হূদ)-এর কথা বর্ণনা কর, যখন সে তার কওমকে বালুকাময় উঁচু উপত্যকায় সতর্ক করে বলেছিল, অথচ তার পূর্বে ও পরে অনেক সতর্ককারী গত হয়েছিল, (এই মর্মে যে,) তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারু ইবাদত কর না। আমি তোমাদের জন্য এক মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করছি’
{আহক্বাফ ৪৬/২১}। ‘তারা বলল, তুমি কি আমাদেরকে আমাদের উপাস্য সমূহ থেকে ফিরিয়ে রাখতে আগমন করেছ? তুমি যদি সত্যবাদী হয়ে থাক, তবে আমাদেরকে যে শাস্তির ভয় দেখাচ্ছ, তা নিয়ে আস দেখি?’ {২২}। হূদ বলল, এ জ্ঞান তো স্রেফ আল্লাহর কাছেই রয়েছে। আমি যে বিষয় নিয়ে প্রেরিত হয়েছি, তা তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে থাকি। কিন্তু আমি দেখছি তোমরা এক মূর্খ সম্প্রদায়’ {২৩}। অতঃপর তারা যখন শাস্তিকে মেঘরূপে তাদের উপত্যকা সমূহের অভিমুখী দেখল, তখন বলল, এতো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দেবে। (হূদ বললেন) বরং এটা সেই বস্তু, যা তোমরা তাড়াতাড়ি চেয়েছিলে। এটা এমন বায়ু, যার মধ্যে রয়েছে মর্মন্তুদ আযাব’ {২৪}। ‘সে তার প্রভুর আদেশে সবকিছুকে ধ্বংস করে দেবে। অতঃপর ভোর বেলায় তারা এমন অবস্থা প্রাপ্ত হ’ল যে, শূন্য বাস্তুভিটাগুলি ছাড়া আর কিছুই দৃষ্টিগোচর হ’ল না। আমরা অপরাধী সম্প্রদায়কে এমনি করেই শাস্তি দিয়ে থাকি’ {২৫}। ‘আমরা তাদেরকে এমন সব বিষয়ে ক্ষমতা দিয়েছিলাম, যেসব বিষয়ে তোমাদের ক্ষমতা দেইনি। আমরা তাদের দিয়েছিলাম কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয়। কিন্তু সেসব কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় তাদের কোন কাজে আসল না, যখন তারা আল্লাহর আয়াত সমূহকে অস্বীকার করল এবং সেই শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করল, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত’ {আহক্বাফ ৪৬/২১-২৬}।

উক্ত বিষয়ে সূরা হা-ক্বক্বাহ ৭-৮ আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তাদের উপরে প্রচন্ড ঝঞ্ঝাবায়ু প্রবাহিত হয়েছিল সাত রাত্রি ও আট দিবস ব্যাপী অবিরতভাবে। (হে মুহাম্মাদ!) তুমি দেখলে দেখতে পেতে যে, তারা অসার খর্জুর কান্ডের ন্যায় ভূপাতিত হয়ে রয়েছে’
{৭}। ‘তুমি (এখন) তাদের কোন অস্তিত্ব দেখতে পাও কি’? {হা-ক্বক্বাহ ৬৯/৭-৮}।

সূরা ফাজ্‌র ৬-৮ আয়াতে ‘আদ বংশের শৌর্য-বীর্য সম্বন্ধে আল্লাহ তাঁর শেষনবীকে শুনিয়ে বলেন, ‘আপনি কি জানেন না আপনার প্রভু কিরূপ আচরণ করেছিলেন ‘আদে ইরম (প্রথম ‘আদ) গোত্রের সাথে’?
{ফজর ৬} ‘যারা ছিল উঁচু স্তম্ভসমূহের মালিক {৭}। ‘এবং যাদের সমান কাউকে জনপদ সমূহে সৃষ্টি করা হয়নি’ {ফাজ্‌র ৮৯/৬-৮)।

ইনশাআল্লাহ চলবে ...

No comments:

Post a Comment

COUNTER W