Saturday, March 10, 2012

ক্যারিবিয়ায় ছুটল ক্লান্ত অস্ট্রেলিয়া

ঘরের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ (সিবি সিরিজ) জয়ের উৎসবটা ওয়াটসন-ওয়ার্নার করতে পারলেন মাত্রই ১২ ঘণ্টা। ক্লান্ত-শ্রান্ত শরীর নিয়ে এরপরই চড়ে বসতে হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজগামী বিমানে। সফরে পাঁচটি ওয়ানডে, দুটি টি-টোয়েন্টি ও তিনটি টেস্ট থাকলেও শেন ওয়াটসনের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিমান ধরেছে শুধু অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে দল।
নিয়মিত অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট। পরশু অ্যাডিলেডে শিরোপানির্ধারক তৃতীয় ফাইনালটিতেও দলে ছিলেন না ক্লার্ক। তাঁর অনুপস্থিতিতে সহ-অধিনায়ক ওয়াটসন নেতৃত্ব দিয়ে দলকে জেতান সিবি সিরিজ। ক্যারিবিয়ান সফরের প্রথম ভাগে যেহেতু ওয়ানডে, তাই ওয়ানডে সিরিজে নেতৃত্ব দেবেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কই। কিন্তু ক্লার্ক আশাবাদী, এপ্রিলের টেস্ট সিরিজেই দলের সঙ্গী হবেন।
কাল সিডনি বিমানবন্দরে ওয়াটসন স্বীকার করেছেন, খেলোয়াড়েরা কিছুটা ক্লান্ত, ‘কোনো সন্দেহ নেই, কিছু খেলোয়াড় পুরো গ্রীষ্মেই খেলছে বলে কিছুটা ক্লান্ত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটা তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
নিতম্বের পেশিতে চোট সত্ত্বেও পেসার জেমস প্যাটিনসন ওয়াটসনদের সঙ্গী। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের একটিতে জয় কিংবা টাই করলেই ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর স্থানটি ধরে রাখা নিশ্চিত হবে অস্ট্রেলিয়ার। তবে একটি নয়, ওয়াটসনের স্বপ্ন সবগুলো ম্যাচই জেতার। সিরিজ শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার, সেন্ট ভিনসেন্টের প্রথম ওয়ানডে দিয়ে। ১০ দিনের মধ্যেই পাঁচটি ম্যাচ! ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি দুটি ২৭ ও ৩০ মার্চ। তিন টেস্টের প্রথমটি শুরু হবে ৭ এপ্রিল। রয়টার্স।

মাশরাফির ভাবনায় শুধুই খেলা

দরজার ঠিক ওপাশে দাঁড়িয়ে এশিয়া কাপ। কোথায় সবাই ক্রিকেট নিয়ে ভাববে তা না, বিতর্কে ঘেরা একটা সময়ই পার করছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। সেই বিতর্ক কখনো কখনো এতই উচ্চগ্রামে যে, খোদ প্রধানমন্ত্রীকেও হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে! এমন ডামাডোলের মধ্যে মাঠের ক্রিকেটে কতটা মনোযোগ দিতে পারছে এশিয়া কাপের বাংলাদেশ দল?
অনুশীলন দেখে মনোযোগের ঘাটতি আছে বলে মনে হয় না। মাঠ-ইনডোর মিলিয়ে শ্রমঘন অনুশীলন হচ্ছে মিরপুরে। কাল সেই অনুশীলনে দর্শক হয়ে বেশ খানিকটা সময় কাটিয়ে গেলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান এনায়েত হোসেন। দলের খোঁজখবরও নিলেন টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে।
খোঁজখবর দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজাও, তবে সেটা সংবাদমাধ্যমকে। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে জানালেন, ড্রেসিংরুমে ক্রিকেট ছাড়া আর কিছু নেই, ‘টুর্নামেন্ট শুরু হয়ে যাচ্ছে, আমার মনে হয় না ড্রেসিংরুমে কেউ এসব নিয়ে ভেবেছে। যাকে নিয়ে আলোচনা, সে-ও এখন দলে। আমরা আমাদের পারফরম্যান্স নিয়েই ভাবছি।’ এ ধরনের পরিস্থিতিতে দলকে উজ্জীবিত রাখতে কী করতে হয়, বাংলাদেশ দলে সেটা মাশরাফিরই সবচেয়ে ভালো জানার কথা। সবার সামনে সেই টোটকা ফাঁস না করলেও এই জায়গাটায় সংবাদমাধ্যমেরও সাহায্য চাইলেন সাবেক অধিনায়ক, ‘এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় এসব নিয়ে আপনাদের আমাদের সঙ্গে কথা না বলা এবং আমাদেরও ওই বিষয়ে না ভাবা।’
বাইরের লু হাওয়া যদি সত্যিই ভেতরে প্রবেশ না করে থাকে, তাহলে ড্রেসিংরুমের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র ভালোই কাজ করার কথা। চোটের ধকল কাটিয়ে প্রায় এক বছর পর জাতীয় দলে ফিরে উপভোগ্য সময় কাটাচ্ছেন মাশরাফিও, ‘খুবই ভালো লাগছে। অনেক দিন পর দলের সঙ্গে আছি। ১১ মাস ধরে এই দিনটারই অপেক্ষায় ছিলাম।’ সেই অপেক্ষার অবসানের পর মাশরাফির লক্ষ্য আপাতত একটাই—পারফরম্যান্স দিয়ে দলে জায়গা ধরে রাখা।
কিন্তু দীর্ঘ বিরতির পর কতটা সহজ সেটা? মাশরাফি মানছেন কঠিন, তবে ছেড়েও দিচ্ছেন না চ্যালেঞ্জটা, ‘আমি যদি আরও পাঁচ মাস পরও ফিরতাম তা-ও পারফর্ম করতে হতো। আমার লক্ষ্য ছিল এশিয়া কাপ। এটা যেমন চ্যালেঞ্জিং, তেমনি আমার জন্য ভালোও। এখানে ভালো করলে আর পেছনে তাকাতে হবে না। ভাগ্য সহায় হলে আশা করি ভালো করব।’
ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপে বড় স্বপ্ন দেখা একটু কঠিন বাংলাদেশের জন্য। তবে দলের ভেতর অনুচ্চারে উড়ে বেড়াচ্ছে অন্তত এক ম্যাচে জয়ের আশা। মিরপুরে কাল অনুশীলন শেষ করে মাশরাফিও বললেন, ‘আমরা প্রতিটি ম্যাচেই জেতার জন্য নামব। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হতে হবে সেই পরিকল্পনা আমরা করছি না। এশিয়া কাপের কথা না ভেবে আমরা তিনটা ম্যাচকেই আলাদাভাবে দেখছি। যদি অন্তত একটা ম্যাচও জিততে পারি সেটাই বড় পাওয়া হবে। এশিয়া কাপ ভাবলেই সেটা অনেক বড় চাপ হয়ে বসবে মাথার ওপর।’
ইনজুরির পর বিপিএলের পরীক্ষা পাস করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন। বিপিএল তাঁকে দিয়েছে ফেরার আত্মবিশ্বাস, ‘বিপিএলে আমার টার্গেট ছিল আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এবং বোলিংয়ের টেকনিকগুলো ঠিক করা। বলব না যে বোলিংয়ের টেকনিক পুরাপুরি ঠিক হয়েছে। এর জন্য অনেক সময় লাগে। তবে গেইলের মতো ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানদের বল করে বুঝতে পেরেছি আমি ভালো অবস্থায় আছি।’
এশিয়া কাপে শততম সেঞ্চুরির স্বপ্ন নিয়ে আসছেন ভারতের শচীন টেন্ডুলকার। তবে মাশরাফির খাতায় টেন্ডুলকার দুশ্চিন্তার অন্য নাম নয়। ভারতের বিপক্ষে বরাবরই কিছু না-কিছু করা এই পেসার বরং অন্যদের নিয়েই বেশি ভাবতে চান, ‘টেন্ডুলকারকে নিয়ে আলাদা করে ভাবার কিছু নেই। জিততে হলে শুধু টেন্ডুলকারকে আউট করলে হবে না। ওদের ১০টা উইকেটই নিতে হবে। টেন্ডুলকার সেঞ্চুরি করলে সেটা ঠেকাতে পারব না আমরা। কাজেই গৌতম গম্ভীর বা রোহিত শর্মা, এদের নিয়েও আলাদা পরিকল্পনা থাকা উচিত।’

COUNTER W