Friday, February 17, 2012

আরেক দফা বিপিএল

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ওরফে বিপিএল কি সফল? না। পুরোপুরি সফল নয়। যেমন লোকারণ্য হবে বলে ভাবা হয়েছিল, যেমন পুরো দেশ মাতোয়ারা হবে বলে ফানুস ওড়ানো হচ্ছিল আদতে হয়নি তেমন কিছু। কাজেই সফল নয় মোটেও।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ওরফে বিপিএল কি ব্যর্থ? না। পুরোপুরি ব্যর্থ নয়। একটা টুর্নামেন্ট হচ্ছে, খ্যাতিমান ক্রিকেটারদের অনেকেরই পদধূলি পড়েছে, মানুষও কিছু আনন্দ পাচ্ছে, কাজেই পুরোপুরি ব্যর্থ নয়।
মানে সমীকরণে যা দাঁড়াচ্ছে বিপিএল পুরো ব্যর্থও নয়, পুরো সফলও নয়। আধা সফল-আধা ব্যর্থ এবং টুর্নামেন্টের মাঝপথের এই অঙ্কে মনে হচ্ছে এটাই আসলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে ভালো হয়েছে। পুরোপুরি ফ্লপ হলে সমস্যা ছিল। তার চেয়েও বেশি সমস্যা ছিল পুরোপুরি সফল হলে। তাহলে আমাদের অপরিণামদর্শী আয়োজক এবং তাঁদের প্রিয় ব্যবসায়ী সঙ্গীরা মিলে এমনভাবে বিপিএল তথা টোয়েন্টি টোয়েন্টির ঢোল বাজাতে শুরু করতেন তার ভিড়ে আমরা প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের কান্না আর দীর্ঘশ্বাসের আওয়াজই শুনতে পেতাম না। এত আয়োজন করে বিপিএলে যখন মানুষের স্রোত তৈরি করা যায়নি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যানের ধাক্কা খেয়েছেন, কাজেই এরপর হিসাব কষবেন। ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও জানবে এবং বুঝবে এ আর দশটা ব্যবসার মতো নয় যে বিনিয়োগে আর বিজ্ঞাপনে পুরোপুরি বিভ্রান্তি তৈরি সম্ভব। আবার পুরো ব্যর্থ হলে সেটাও শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য দুঃসংবাদ ছিল। খেলার যেকোনো আয়োজনের ব্যর্থতা শেষ পর্যন্ত খেলাটার জন্য সুখবর নয় কোনোভাবেই। কাজেই এই আধা ব্যর্থ-আধা সফল বিপিএলই বাংলাদেশের জন্য খুব ভালো। আর টুর্নামেন্টটাকে এই পর্যায়ে নামিয়ে এনে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা জানিয়ে দিলেন, আমরা অতটা হুজুগে নই যতটা আমাদের কর্তারা ভেবে বসে আছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে (বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কি?) দেশের ক্রিকেটের ভালো-মন্দ বিচার তাদের চেয়েও আমরা ভালো করি এবং এ-ও তাঁরা ঘোষণার স্বরেই জানালেন যে আরেকটি দেশকে মডেল ধরে বাংলাদেশের সামাজিক চিন্তা এবং ক্রিকেটরুচিকে নির্ণয়ের চেষ্টা করা পুরোপুরিই ভুল। সেই ভুল করে আয়োজকরা ঘোল খেয়েছেন কিন্তু ঘোলকে সরবত ধরে এখনো খেয়েই চলছেন। সম্ভবত বদহজম হওয়ার আগ পর্যন্ত চলবে।
উদ্বোধনী দিনের কথা মনে করুন। শুরুতে বাপ্পি লাহিড়ি এবং শান। সঙ্গে খুব খারাপ দেখায় বলে বোধহয় কুমার বিশ্বজিৎকে রাখা হয়েছিল। তাঁরা তিনজন তিন রকম তিনটা কাগজ দেখে দেখে গান গাইছেন, দৃশ্য হিসেবে অত্যন্ত হাস্যকর। গানের কথা! টোয়েন্টি টোয়েন্টি আর ডিজুস যুগে নাকি সবই যায়, কাজেই আর খুব বেশি না-ই বা বললাম। আয়ুব বাচ্চু বড় গায়ক সন্দেহ নেই কিন্তু তাঁকে দিয়ে ভাষার গান গাওয়ানোর পেছনের যুক্তি বা কুযুক্তিটা কি কে জানে! যাই হোক, এতটুকু পর্যন্ত তবু এক-আধটু বাংলাদেশ ছিল। এরপর বাকিটা ভারত! তাদের নাচ-গান, উল্লাস-উচ্ছ্বাস দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল এটা যেন ভারতীয় সংস্কৃতির প্রদর্শনী চলছে। ওদের আকাশ সংস্কৃতি যখন আমাদের শিশু-কিশোরদের রুচিবিকৃতি ঘটিয়ে চলছে, যখন ভারতের সিনেমার প্রবেশাধিকারে বাংলাদেশের সিনেমার কফিনে শেষ পেরেক ঢুকছে, তখন ক্রিকেটের নামে ভারত আর তাদের নায়ক-নায়িকাদেরই চেনানো হচ্ছে যেন! সেই ভারত, যারা এই টুর্নামেন্টে তাদের কোনো খেলোয়াড়কে খেলার অনুমতি দেয়নি। সেই ভারত, যারা আজ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ওদের মাঠে টেস্ট খেলতে দেয়নি। অথচ বিপিএলের মোড়কে সেই ভারত আর তার সংস্কৃতিকে চেনানো-জানানোর দায়িত্ব নিয়ে বসেছেন যেন বাংলাদেশের দূরদর্শী আয়োজকরা। ফ্র্যাঞ্চাইজিরাও পিছিয়ে নেই। কয়েক দিন আগে দেখলাম রিয়া সেন বা রাইমা সেন বাংলাদেশে এসেছেন সিলেটের সমর্থক হিসেবে। আশ্চর্য ব্যাপার! সিলেট নামটিই যিনি এর আগে হয়তো শোনেননি বা এরপর মনেও রাখবেন না হয়তো, তিনি এসেছেন সেই দলকে উদ্দীপ্ত করতে! বলিউডের দ্বিতীয় শ্রেণীর অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আরো আসছেন এবং সম্ভবত আসতেই থাকবেন। টাকার বিনিময়ে আনা এসব ভাড়াটে সমর্থকদের দিয়ে যে ঠিক কী অর্জন করা যাবে কে জানে! সমর্থন অতি পবিত্র একটা জিনিস। এই একটা জায়গায়, অর্থাৎ খেলাধুলায় মানুষের সমর্থন হয় নিঃস্বার্থ এবং হৃদয়ের আবেগ মেশানো। এই আমরাই তো দেখেছি বাংলাদেশে আবাহনী-মোহামেডানকে হৃদয়ের সবটা দিয়ে সমর্থন করে বাংলাদেশের মানুষ কি পাগুলে কাণ্ডই না করে! এই আমরাই তো দেখি, বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য কী প্রাণের টানে স্রোতের মতো স্টেডিয়ামের দিকে ছুটে চলে মানুষের মিছিল। সেখানে নাকি মেকি আবেগ দেখাতে ভাড়া করে বিদেশ থেকে লোক আনতে হয়! দেশিদের মধ্যেও ভাড়াটে আছেন অনেক। নায়ক-গায়করা দেখছি বিভিন্ন দলের অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন। আচ্ছা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নাম ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট রাখা হয়েছে কেন? সে অঞ্চলের সব মানুষ এই দলটার পেছনে থাকবে এ জন্যই তো! এখন সেই অঞ্চলের একজন নামকরা নায়ক যদি অন্য অঞ্চলের একটা দলের হয়ে গলা ফাটান তাহলে সমর্থন নামের নির্দোষ আবেগটাকেই তো অসম্মান করা হয়! আইপিএলের উদাহরণ দেবেন! জানিয়ে রাখি, আইপিএল ব্যবসায়িক সাফল্যের মডেল হতে পারে (হয় বলেই তালিকায় সবচেয়ে নিচে থাকা দলটি সবচেয়ে বেশি আয় করে) কিন্তু ক্রিকেট বা ক্রিকেট সংস্কৃতির জন্য বিষবৃক্ষ। এবং আগেই বলেছি বাংলাদেশকে আরেক দেশের দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করা অন্যায় এবং ভুল। তারকা সমর্থক অনেক বড় দলের আছেন, তাঁরা মাঠে আসেন। কিন্তু মনে রাখবেন, রাফায়েল নাদাল টাকার বিনিময়ে রিয়াল মাদ্রিদকে সমর্থন করতে আসেন না! আর নাদাল কিন্তু রিয়ালেরও আগে মায়োরকার সমর্থক। কারণ ওখানে তাঁর নিজের বাড়ি। নিজের ঘর।
খুব গর্বের সঙ্গে দাবি করি খেলাধুলা পৃথিবীর বিশুদ্ধতম শিল্প এবং শ্রেষ্ঠতম বিনোদন মাধ্যম। এসব আইপিএল-বিপিএল দেখতে দেখতে মাঝেমধ্যে মনে হয় খেলার এই সৌন্দর্যটাকে, এই অহংকারটাকে কী নির্মমভাবে ভূলণ্ঠিত করা হচ্ছে। ক্রিকেট চলছে, বিশ্বসেরা ক্রিকেটাররা খেলছেন, তবু নাকি আনন্দের জন্য চিয়ার গার্ল লাগে। পৃথিবীর আর কোনো খেলায় কিন্তু লাগে না। ক্রিকেটেও কিন্তু এই সেদিনও লাগত না। তখনকার ক্রিকেট কি বিনোদনদায়ী ছিল! ব্র্যাডম্যান-সোবার্স থেকে শুরু হয়ে রিচার্ডস-ইমরান-গাভাস্কার-কপিল-টেন্ডুলকার-লারা-ওয়ার্নরা কি কম বিনোদনের ফেরি করেছেন! তবু কিছু মানুষের অদ্ভুতুড়ে চিন্তায় আজ চিয়ার গার্ল লাগে, আজ বিদেশি সিনেমার নায়ক-গায়ককে ভাড়া করে আনতে হয়! কর্তাদের কাছে এরা মণি-মুক্তো হতে পারেন কিন্তু মানুষের কাছে এঁদের মূল্য পাথরকুচির চেয়ে বেশি কিছু নয়। খেয়াল করুণ, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যেদিন সবচেয়ে বেশি নাচ-গান হলো সেদিন মানুষ সবচেয়ে কম। এরপর ক্রিকেটের দেখা যখন মিলল বিপিএলে তখন থেকে মানুষ কিছুটা মাঠমুখী। তার মানে, আমাদের মানুষকে কর্তারা যতটা হুজুগে ভেবে বসে আছেন মানুষ তার চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষিত। আর যাঁদের আমরা শিক্ষিত ভেবে বসে আছি তারা আসলে অনেক বেশি অসচেতন। তাই ঘোল খেয়ে চলছেন কিন্তু ঘোলটাকে এখনো সরবত ভেবে চলছেন। বদহজম হওয়ার অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।
পুনশ্চ ১ : বিপিএলের পক্ষে খুব প্রচার চালানো হয়েছিল যে এখানে আমাদের তরুণ ক্রিকেটাররা নিজেদের মেলে ধরবে। বেশ কয়েকজনের দেখা মিলবে। কোথায়? খুঁজে তো পাচ্ছি না।
পুনশ্চ ২ : আমরা বরং দেখছি রিটায়ারমেন্টে যাওয়া পার্টি ক্রিকেটার এবং অন্য দেশের অখ্যাত তরুণদের প্রদর্শনী। তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারছেন না আমাদের প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটাররা। আমাদের আইকনদের চেয়ে ওদের কার্যকারিতা বেশি, বিপিএল যদি হয়ে থাকে এই অপ্রিয় সত্য প্রমাণের জন্য তাহলে কিন্তু আয়োজকরা সফল। এখানে আর আংশিক নয়, পুরো সফল।

অনিশ্চিত ক্লার্ক, ৬ মাস মাঠের বাইরে মার্শ


খুব সম্ভব এক ম্যাচ পরই দায়িত্বটা ছাড়তে হচ্ছে না রিকি পন্টিংকে। হ্যামস্ট্রিংয়ের ওই চোটের কারণে আগামীকাল ভারতের বিপক্ষে ব্রিসবেনেও হয়তো খেলতে পারবেন না নিয়মিত অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। তাই আরো এক ম্যাচের জন্য পন্টিংয়ের নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন খোদ ক্লার্কই, 'আমার চোটের যা অবস্থা তাতে মনে হয় না ব্রিসবেনে খেলতে পারব। ফিট হওয়ার জন্য ফিজিওর সঙ্গে গত কয়েকটা দিন যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। খেলতে না পারলে যে কারোই খারাপ লাগে। তবে আমি জানি পন্টিংয়ের দায়িত্বটা পালন করতে কোনো সমস্যাই হবে না। অনেক দিন ধরেই তো এই কাজটা স্বাচ্ছন্দ্যে করে এসেছে ও।'
পন্টিং না হয় আরো এক ম্যাচে নেতৃত্ব দেবেন। কিন্তু সেই ম্যাচেও রান না পেলে হ্যাডিনের মতো 'বিশ্রাম' দেওয়া হতে পারে এই কিংবদন্তিকেও। এবারের ত্রিদেশীয় সিরিজের চার ম্যাচে তাঁর রান ২, ১, ৬ ও ২। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে একটি ডাবল ও একটি সেঞ্চুরি পাওয়া পন্টিংয়ের রান না পাওয়ায় তাই উদ্বিগ্ন সেই দেশের মিডিয়া। হেরাল্ড সান তো লিখেই ফেলেছে, '৩৭ বছর বয়সী পন্টিংয়ের দলে থাকতে রান করতেই হবে। রান ছাড়া ওর হয়ে কথা বলবে না কেউই। ব্রিসবেনেও ব্যর্থ হলে হয়তো হ্যাডিনের মতো বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে তাঁকে।'
ব্রিসবেনে না পারলেও ত্রিদেশীয় সিরিজেই ফিরবেন ক্লার্ক। তবে এই টুর্নামেন্টে আর খেলা হচ্ছে না তরুণ অলরাউন্ডার মিচেল মার্শের। পরশু সিডনিতে অনুশীলনের সময় পিঠে ব্যথা পান ২০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। পরে স্ক্যানে ধরা পরে চিড়। পুরোপুরি সেরে উঠতে মাস ছয়েকের মতো লেগে যেতে পারে মার্শের। তাঁর পরিবর্তে ব্রিসবেনের ম্যাচের জন্য এখনো অবশ্য কাউকে ডাকেননি নির্বাচকরা। তবে দরকার পড়লেই কেবল ডাকা হবে কাউকে। ওয়েবসাইট

প্রতারণার ডিজিটাল ফাঁদ


গ্রাহকদের কম সময়ে বেশি আয়ের নানা টোপ দিচ্ছেন ডোল্যান্সারের কর্মীরা।( ইনসেটে রোকন ইউ আহমেদ ) ছবি : কালের কণ্ঠ
ডোল্যান্সার নামের প্রতিষ্ঠানটি তুলেছে ৫০০
কোটি টাকা। পাততাড়ি গোটানোর আশঙ্কা
আপনি বেকার, লেখাপড়া কম জানেন, নো টেনশন। ঘরে কম্পিউটার আর ইন্টারনেট থাকলেই হবে। আয় করতে পারবেন ডলার। ৫০টি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই প্রতিদিন এক ডলার! মাস শেষে ৩০ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় আড়াই হাজার টাকারও বেশি। অথচ বিনিয়োগ করতে হবে এককালীন মাত্র সাড়ে সাত হাজার টাকা!'_এ ধরনের লোভনীয় আয়ের কথা বলে 'ডোল্যান্সার', 'ল্যান্সটেক' ইত্যাদি নামের ইন্টারনেটভিত্তিক বেশ কয়েকটি এমএলএম প্রতিষ্ঠান চটকদার ফাঁদ পেতে বসেছে। আর এদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছেন হাজার হাজার বেকার তরুণ-তরুণী। তাঁদের ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে ভুঁইফোঁড় প্রতিষ্ঠানগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এক হিসাবে দেখা গেছে, সারা দেশে প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষের কাছ থেকে সদস্য বানানোর কথা বলে ডোল্যান্সার ইতিমধ্যেই হাতিয়ে নিয়েছে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। সদস্যরা প্রথম দিকে সামান্য কিছু আয়ের মুখ দেখলেও এখন আর কিছুই পাচ্ছেন না। ডোল্যান্সারের অফিসে গিয়ে তাঁদের এখন ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে। আশঙ্কা বাড়ছে, ডোল্যান্সারের মতো এমএলএম প্রতিষ্ঠানগুলো যেকোনো সময় পাততাড়ি গুটিয়ে উধাও হতে পারে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের বলেছেন, মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কম্পানিগুলো মানুষের কাছে স্বপ্ন বিক্রি করে তাদের অনেককে নিঃস্ব করছে। এ ধরনের প্রায় ৬৯টি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন রয়েছে। প্রতারণার অভিযোগ পাওয়ার পর নতুন করে নিবন্ধন স্থগিত রাখা হয়েছে।
গত বছর চটকদার ওয়েবসাইট তৈরি করে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) পদ্ধতিতে সদস্য সংগ্রহ শুরু করে ডোল্যান্সার। রাজধানীতে রয়েছে তাদের একাধিক অফিস। কার্যালয়ে গিয়ে সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুরুতে কিছুদিন তাদের ক্লিকের আয়ের টাকা দেওয়া হলেও গত জানুয়ারি মাস থেকে তা বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স কাজের কথা বলা হলেও করার মতো কোনো প্রজেক্ট থাকে না। যেকোনো দিন ডোল্যান্সার অফিস গুটিয়ে উধাও হয়ে যাবে এমন আশঙ্কাও করছেন অনেক সদস্য।
ডোল্যান্সার নামের ওয়েবসাইটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেছেন রোকন ইউ আহমেদ নামের এক ব্যক্তি। তাঁর পদ ব্যবস্থাপনা পরিচালক। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন নুরুল বশির। ডোল্যান্সারের প্রধান কার্যালয় ধানমণ্ডির জিগাতলায় অক্ষয় প্লাজার পঞ্চম তলায়। জিগাতলার প্রধান কার্যালয়ে বসলেও ডোল্যান্সারের কার্যক্রম চলে কলাবাগান অফিস ও বারিধারা ডিওএইচএস অফিসে। গত শনিবার দুপুর ১২ টায় ডোল্যান্সারের কলাবাগানর কার্যালয়ের পঞ্চম তলায় গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক উঠতি বয়সী যুবকের ভিড়। ক্লিক করে উপার্জনের আশায় সদস্য হতে এসেছেন ডোল্যান্সারে। ওই সময় এ প্রতিবেদক নিজের পরিচয় প্রকাশ না করেই কথা বলেন ডোল্যান্সারের এক 'স্টার সদস্য' মেহেদী হাসানের সঙ্গে। তাঁর অধীনে সহস্রাধিক সদস্য আছে। সদস্য হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান বলেন, কোনো সমস্যা নেই, সাড়ে সাত হাজার টাকা জমা দিলেই সদস্য হওয়ায় যাবে। এ ছাড়া আরেকটি প্রকল্পে ৫০০ ডলার জমা দিলে মাসে পাঁচ হাজার ২২৫ টাকা পাওয়া যাবে দুই বছর পর্যন্ত। আর এক হাজার ডলার জমা দিলে মাসে ১০ হাজার ৫০০ টাকা উপার্জন করা যায়। এমন সদস্য কতজন আছে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান বলেন, 'শুধু আমার অধীনেই তিন শর বেশি আছে। ঘরে বসে উপার্জনের সহজ রাস্তা ডোল্যান্সার। ডায়মন্ড সদস্য হলে দুই লাখ টাকার বেশি মাসে উপার্জন করা যায়। ডোল্যান্সারে ডায়মন্ড সদস্য আছেন সাতজন। গোল্ড সদস্য আছেন ২৪ জনের বেশি। সিলভার সদস্য আছেন শতাধিক। ডায়মন্ড, গোল্ড, সিলভার, ব্রোঞ্জ, স্টার মিলিয়ে দুই লক্ষাধিক সদস্য আছে ডোল্যান্সারে।
ক্লিক করলেই 'ডলার': সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদস্যদের দৈনিক ১০০টি ওয়েবসাইটের লিংক দিয়ে থাকে ডোল্যান্সার। সেই লিংকগুলোতে ক্লিক করতে হয় সদস্যদের। প্রতিটি লিংকে ৩০ সেকেন্ড করে থাকতে হয়। সদস্যরা প্রতি ক্লিকে এক সেন্ট আর ১০০ ক্লিকে এক ডলার পেয়ে থাকেন। সেই হিসাবে মাসে ৩০ ডলার পাওয়ার কথা একেকজন সদস্যের। হিসাব কষে দেখা গেছে, সদস্যের জমা দেওয়া ১০০ ডলার তুলতে গেলেই চার থেকে পাঁচ মাস লেগে যাবে। আর এখন তো টাকাই দেওয়া হচ্ছে না। সদস্যরা বলেন, সাইটের প্রজেক্ট নিয়েও রয়েছে বড় ধরনের প্রতারণা।
১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ : ডোল্যান্সারের সদস্যদের নেটের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের সাইটে ক্লিক করার মাধ্যমে মাসিক যে ৩০ ডলার উপার্জন পাওয়ার কথা, সেই টাকা প্রদান কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে ডোল্যান্সার কর্তৃপক্ষ। ১ জানুয়ারি থেকে সদস্যদের টাকা দেওয়া বন্ধ থাকার কথা ডোল্যান্সারের লোকজন স্বীকার করলেও প্রকৃতপক্ষে গত বছরের নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের জানুয়ায়ি মাসের কোনো টাকাই সদস্যরা পাচ্ছেন না। পোস্ট ওয়ান নামের নতুন প্রকল্প চালু হচ্ছে বলে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সদস্যদের পুরোপুরি টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে। এই অবস্থায় ধীরে ধীরে ফুঁসে উঠছেন ডোল্যান্সারের সদস্যরা। কোনো সদস্য দুই মাস, কোনো সদস্য তিন মাস টাকা পেলেও এখন ডোল্যান্সারের কোনো সদস্যই টাকা পাচ্ছেন না।
গত শনিবার সরেজমিনে কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ডোল্যান্সারের কার্যালয়ের গিয়ে দেখা যায়, অর্ধশত ছেলেমেয়ে ভিড় করেছে ডোল্যান্সারের অ্যাকাউন্টস বিভাগের সামনে। কিন্তু কোনো কর্মকর্তা নেই কক্ষে। 'স্টার সদস্য' আমিনুল ইসলাম সদস্যদের বলেন, নতুন একটি প্রকল্পের কাজ ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে আবার চালু হবে। এ সময় উত্তেজিত হয়ে ডোল্যান্সারের সদস্য আরিফ বলেন, গত মাস থেকে নেটে কাজ হচ্ছে বলে আসছেন, কিন্তু এখন শেষও হচ্ছে না। কোনো কর্মকর্তাও অফিসে আসে না।
কথা হয় মিশু নামের এক সদস্যের সঙ্গে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সাত হাজার টাকায় সদস্য হওয়ার পর প্রথম মাসে ক্লিকের মাধ্যমে টাকা পাই কিন্তু দুই মাস হতে চলছে কোনো টাকা পাচ্ছি না।' ঢাকা কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র আল আমিন বলেন, 'ডলারের আসায় সদস্য হলাম, ডলারের দেখা পাইলাম না।'
ডোল্যান্সারের সদস্য আরিফুর রহমান বলেন, 'অনেক কষ্টে সাত হাজার টাকা নিয়ে সদস্য হয়েছি। ভেবেছিলাম মাসে ৩০ ডলার পেলে পড়ালেখার খরচ হয়ে যাবে। কিন্তু টাকার কোনো মুখ দেখছি না। আমাদের সদস্য আর টিম লিডার ছাড়া কাউকে দেখা পাচ্ছি না। আমার স্টার সদস্য কিংবা গোল্ডেন সদস্যদের ফোন দিলে তাঁরাও ফোন ধরেন না।'
মিজানুর রহমান, আসলাম হোসেন, নয়ন, কবির হোসেন, সাঈদ হাসানসহ একাধিক সদস্য অভিযোগ করেন, অফিসে এখন শুধু নিচু স্তরের সদস্যরা আসেন। বড় কোনো কর্মকর্তাকে তেমন দেখা যায় না। সাতমসজিদ রোডের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে এমডির সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও দেখা করতে দেওয়া হয় না। এই সদস্যদের আশঙ্কা, প্রতিষ্ঠানটি যেকোনো সময় 'হায় হায় কম্পানি' হয়ে যেতে পারে।
জানা যায়, খুলনা, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, যশোরসহ বিভিন্ন জেলায় ডোল্যান্সারের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। ডোল্যান্সার এমএলএম পদ্ধতিতে একজনকে সদস্য বানায়। সদস্যদের বলা হয়, নতুনদের এনে নিজের গ্রুপ (ডান হাত-বাঁ হাত, তথা বাইনারি পদ্ধতিতে) তৈরি করতে পারলে তাদের ক্লিকের আয়ের একটি অংশও পাওয়া যাবে। এতে প্রলুব্ধ হয়ে একজন সদস্য হলে তাকে ডান হাত এবং বাঁ হাত নামে দুটো হাত বানাতে হবে। অর্থাৎ আরো দুজনকে প্রতারণার জালের ভেতর আনতে হবে।
ডোল্যান্সার ইন্টারনেটে কাজ পাইয়ে দেওয়ার সুযোগের কথা বলে স্থানীয় পত্রপত্রিকায় প্রেস বিজ্ঞপ্তিও পাঠায়। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট না ঘেঁটে, তথ্য যাচাই-বাছাই না করে বিজ্ঞপ্তিগুলো ছাপাও হয়। প্রথম সারির পত্রপত্রিকায় ডোল্যান্সারের সংবাদ দেখে লোকজনও সহজেই বিশ্বাস করছে এবং সদস্য হচ্ছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়াসহ সারা দেশে ডোল্যান্সারের প্রকৃত সদস্যসংখ্যা দুই লাখের বেশি। প্রতিটি সদস্যদের কাছ থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা নেওয়া হলে দুই লাখ সদস্যের কাছ থেকে ইতিমধ্যে প্রায় দেড় শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ডোল্যান্সার নামের এই ডিজিটাল প্রতারক চক্র।

ওয়েবসাইটে বিভ্রান্তিকর তথ্য : সদস্যরা যখন ক্লিকের অর্থ আদায়ের জন্য অফিসে ধরনা দিচ্ছেন দিনের পর দিন, তখন তাঁদের ওয়েবসাইটে ঢুকলে মূল পাতায়ই চোখে পড়ে কিছু তথ্য : ফ্রিল্যান্স প্রফেশনালস এক লাখ ৮৪ হাজার ৭৯২ জন, ব্যবহারকারীদের আয় ১৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬৬৪ ডলার, শেষ হওয়া মোট প্রকল্প ৩৭৬।
ডোল্যান্সার তাদের মাধ্যমে ৩৭৬টি ফ্রিল্যান্স কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা দাবি করলেও সে সম্পর্কে কোনো তথ্য তো নেই, আছে বড় ফাঁকির নিদর্শন। গতকাল সাইটে ঢুকে দেখা যায়, কাজদাতা হিসেবে 'টপ এমপ্রয়ারস' পাতায় ৯ জনের নাম (তাও কোনো প্রতিষ্ঠানের নয়, ছদ্ম নাম) দেওয়া আছে। ৯ জনের মোট প্রজেক্ট হচ্ছে ১১৩ এবং সবগুলোই বাতিল (ক্যানসেলড্) হিসেবে চিহ্নিত করা আছে। ৯ শীর্ষ কাজদাতার কারোই বর্তমানে কোনো চলমান কাজের (প্রজেক্ট) প্রস্তাব নেই। সাইটে বাংলাদেশের কোনো কার্যালয়ের ঠিকানা, ফোন নম্বর কিছুই নেই। ক্যালিফোর্নিয়ার 'ডোল্যান্সার ইনকরপোরেটেড' নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ও ফোন নম্বর সাইটে দেওয়া আছে, তবে গুগল দিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান থাকার কোনো ধরনের তথ্য পাওয়া যায়নি। অথচ দাবি করা হচ্ছে, 'ডোল্যান্সার ইনকরপোরেটেড' ১২ বছর ধরে ব্যবসা করছে।
জানা যায়, ইনটুইট ইনফোসিস নামের একটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের মালিক রোকন আহমেদ এই ডোল্যান্সারে গড়ে তুলেছেন। ডোল্যান্সারের জিগাতলার প্রধান কার্যালয়ের অক্ষয় প্লাজার পঞ্চম তলায় সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুন হোসেনের সঙ্গে। ডোল্যান্সারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোকন ইউ আহমেদের সঙ্গে দেখা করার কথা বলতেই তিনি বলেন, 'স্যার অফিসে নেই।' তাঁর কোনো মোবাইল নম্বর দেওয়া যাবে কি না? উত্তরে বলেন, 'স্যারের মোবাইল নম্বর দেওয়া নিষেধ। আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে যান, স্যার অফিসে এলে জানাবা।' তবে ডোল্যান্সার আর যোগাযোগ করেনি। নম্বরে যোগাযোগ করে ফোন দিতেই কালের কণ্ঠের পরিচয় পেয়ে ওই প্রান্ত থেকে সংযোগ কেটে দেওয়া হয়।
ফ্রিল্যান্সাররা বলছেন প্রতারণা : ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্স কাজ করায় অভিজ্ঞ তাহের চৌধুরী সুমন কালের কণ্ঠকে বলেন, ডোল্যান্সার কোনো ফ্রিল্যান্সিং সাইট নয়। লোকজনকে ফ্রিল্যান্স কাজের প্রলোভন দেখিয়ে অনেক টাকা নিয়ে তাদের যুক্ত করা হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সার রুবেল আহমেদ বলেন, 'ডোল্যান্সারের কারণে সাধারণ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং মানে এখন ওয়েবসাইট ক্লিক করাকে বোঝেন। এ ধরনের ওয়েবসাইট ক্লিক করে টাকা আয়ের চিন্তা যাঁরা করবেন, তাঁরা জীবনেও সফল হবেন না।'
বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত ফ্রিল্যান্স কাজের সাইটগুলো কোনো অর্থ নেয় না বলেও জানান ফ্রিল্যান্সাররা। কোডবঙ্ার প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী এবং 'আমাদের প্রযুক্তি' ফোরামের সঞ্চালক সবুজ কুমার কুণ্ডু জানান, 'তরুণদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে এক ধরনের জোচ্চোর ও প্রতারক ইন্টারনেটে প্রতারণার ব্যবসা খুলে বসেছে। যারা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে চাঁন তাঁদের এখনই সতর্ক হতে হবে। নতুবা বড় ধরনের সর্বনাশ হতে পারে। কাজের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত মার্কেট প্লেস যেমন ওডেস্ক.কম, ফ্রিল্যান্সার.কম, ইল্যান্স.কম-এর মতো সাইটে কাজ শুরু করতে হবে। যেসব সাইটে কাজ শুরু করতে টাকার প্রয়োজন হয়, সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।'
প্রতারণা আরো যারা করছে : খুলনা মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং পার্শ্ববর্তী জেলা সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও যশোরে ডোল্যান্সারের মতো একই কায়দায় ডলার আয়ের কথা বলে প্রতারণা করে যাচ্ছে ল্যান্সটেক নামের ইন্টারনেটভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে রয়েছে হাবিবুল বাশার, সুপ্রকাশ সরকারসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তবে ল্যান্সেটেকের চেয়ারম্যান হাবিবুল বাশার কালের কণ্ঠকে বলেন, ল্যান্সটেক কোনো এমএলএম কম্পানি নয়। এটি একটি আউট সোর্সিং প্রতিষ্ঠান। একইভাবে রিয়েল সার্ভে অনলাইন, স্কাইলান্সার, পেইড টু ক্লিক, অ্যাড আউটসোর্সিংসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটে আয়ের সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রতারণা বন্ধে আইন : দেশের এমএলএম কম্পানিগুলো পরিচালনার জন্য কোনো আইন বা নীতিমালা না থাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যবসাকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে প্রথমে নীতিমালা ও পরে আইন করার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের বলেন, এমএলএম কম্পানিগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে 'ডাইরেক্ট সেল আইন, ২০১২' নামে একটি আইনের খসড়া প্রণয়ন করে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মতামত পাওয়া গেলে খসড়া আইনটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
খসড়া নীতিমালার ষষ্ঠ অধ্যায়ের অপরাধ দণ্ডতে বলা হয়েছে, অবস্তুগত বা অলীক পণ্য, স্থাবর সম্পত্তি ও বৃক্ষ, কমিশন বা বোনাস হিসেবে কোনোরূপ শেয়ার বা ঋণপত্র ক্রয়-বিক্রয়, সঞ্চয়পত্র, বোনাস স্কিম, কিস্তির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ বা সঞ্চয় বা বিলিবণ্টন এমনকি লটারির টিকিটও বিক্রি করা যাবে না।
  সুত্রঃ  কালের কণ্ঠ

COUNTER W