Friday, March 9, 2012

দাওয়াত ও তাবলীগে নারীদের ভূমিকা- ২য় পর্ব

দাওয়াত ও তাবলীগে মহিলাদের ভূমিকা :
ভাল কাজে অংশগ্রহণ মুমিন নারীদের স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত। এজন্য দেখা যায়, তারা নিজ অঞ্চলে থেকে বিভিন্নভাবে দ্বীনের সহযোগিতা করেছেন। মোট কথা, দাওয়াত ও তাবলীগে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের ভূমিকাও অপরিসীম। নিম্নে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হ’ল।-


ক. নারীদের দাওয়াত দানের প্রয়োজনীয়তা :
নারী জাতির ফিতনা সম্পর্কে বহু দলীল-প্রমাণ রয়েছে। বহু জাতি নারীর কূটকৌশল ও মায়াজালে পড়ে ধ্বংস হয়েছে। সুতরাং পুরুষের আকর্ষণের প্রধান হাতিয়ার এই নারীকে সংযত ও নিরাপদ রাখার মধ্যে রয়েছে পুরো জাতির কল্যাণ। মন্দ চরিত্রের নারীদের ক্ষতিকর বিষয় সমূহ থেকে পুরুষদেরকে হুঁশিয়ার করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছা.) বলেন, ‘আমি পুরুষদের জন্য নারীদের চেয়ে ক্ষতিকর জিনিস আর কিছু রেখে যাইনি’।*১১*


অন্যত্র রাসূল (ছা.) বলেন, ‘দুনিয়া হচ্ছে সুমিষ্ট সবুজ স্থান। আল্লাহ তোমাদেরকে এখানে প্রতিনিধি করেছেন যেন তিনি দেখতে পারেন, তোমরা কেমন আমল কর। সুতরাং তোমরা দুনিয়াকে ভয় কর এবং নারীদের ভয় কর (সতর্ক হও)। কারণ বনী ইসরাঈলের প্রথম ফিতনা নারীদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল।*১২*


রাসূলুল্লাহ (ছা.) বলেন, ‘অকল্যাণ রয়েছে নারীতে, বাসস্থানে ও ঘোড়ায়’।*১৩*


স্বয়ং আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের ষড়যন্ত্র বড়ই কঠিন’ {ইউসুফ ২৮}।


উপরে উল্লিখিত বাণীগুলোতে নারীদের যে অনিষ্টের কথা বলা হয়েছে, তা দ্বারা শরী‘আত অমান্যকারী নারী উদ্দেশ্য। যাদের সংসার দেখাশুনা করার, বাচ্চা প্রতিপালনের যোগ্যতা নেই। সামান্য কথায় ঝগড়া করে। পুরুষের সাথে কাঁধ মিলিয়ে সমঅধিকার চায়। যারা ঘরের বধূ হওয়ার চেয়ে অফিসের ‘ম্যাডাম’ হওয়াকে বেশি আকর্ষণীয় মনে করে।


তবে মুমিন নারীদের হতাশার কিছু নেই। সৎ নারীদের রাসূলুল্লাহ (ছা.) ‘পৃথিবীর সর্বোত্তম সম্পদ’ বলেছেন।*১৪* ছাহাবীগণ বললেন, যদি আমরা জানতে পারতাম কোন সম্পদ উত্তম, তবে তা আমরা জমা করতাম। রাসূলুল্লাহ (ছা.) বললেন, তোমাদের কারো সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ হল আল্লাহর যিকরকারী জিহবা, কৃতজ্ঞ অন্তর ও মুমিনা স্ত্রী, যে তার (স্বামীর) ঈমানের ব্যাপারে সাহায্য করে।*১৫* নেককার নারী স্বভাবে এত উন্নত হয় যে, স্বয়ং আল্লাহ তাদেরকে সালাম পাঠান। রাসূলুল্লাহ (ছা.) বলেন, (হেরাগুহায় ধ্যানমগ্ন থাকার দিনগুলিতে) একদিন জিবরীল (আ.) নবী করীম (ছা.)-এর নিকট এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! এই যে খাদীজা একটি পাত্র নিয়ে আসছেন। তাতে তরকারী ও খাদ্যদ্রব্য রয়েছে। তিনি যখন আপনার নিকট আসবেন, তখন আপনি তাঁকে তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ থেকে সালাম বলবেন এবং তাঁকে জান্নাতের মধ্যে মুক্তাখচিত এমন একটি প্রাসাদের সুসংবাদ দিবেন, যেখানে হৈ-হুল্লোড় নেই, নেই কোন কষ্ট’।*১৬* এমনিভাবে মা আয়েশা (রা.) কেও জিবরীল (আ.) সালাম জানিয়েছেন। জবাবে তিনিও জিবরীল (আ.)-কে সালাম জানান।*১৭* সুতরাং নেককার নারীরা তাদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে সমাজে থাকবে মাথা উঁচু করে। সমাজ দেখবে হাদীছে যে সমস্ত নারীকে তিরষ্কার করা হয়েছে, তারা সেই সব নারী নয়। তারা আমলে, আক্বীদায়, যোগ্যতায় অনেক পুরুষের চেয়েও উত্তম।


এজন্য নারীরা তাদের অবস্থানে থেকে মন্দ নারীদের ভয়াবহ পরিণতি তাদের নিকট তুলে ধরবে। তারা যেন পুরো জাতির চরিত্র নষ্টের কারণ না হয়, তাদের মাধ্যমে যেন যেনা ছড়িয়ে না পড়ে, যুব চরিত্র ধ্বংস না হয়- তা বুঝিয়ে বলবে। তাই নারীদের দাওয়াতের প্রয়োজনীয়তা খুব বেশী। পাশাপাশি নেককার নারীদের যে সম্মান, নিরাপত্তা, প্রশান্তি সর্বশেষে জান্নাতের সুসংবাদ ঘোষিত হয়েছে তা শুনিয়ে নারীদেরকে সেদিকে আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে।

No comments:

Post a Comment

COUNTER W